রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ পূর্বাহ্ন
আশুগঞ্জ প্রতিনিধি ,কালের খবর :
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদের বিরুদ্ধে এবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ মহাপরিদর্শকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা। ৯ই জুলাই এ অভিযোগ দেয়ার আগে উপজেলার ৭ ইউপি চেয়ারম্যান ওসি’র অপসারণ চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। অভিযোগে বলা হয়, জাবেদ মাহমুদ কয়েক মাস আগে এই থানায় যোগ দেন। এর পর থেকে এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ওসি দুষ্টের দমন এবং শিষ্টের লালনের পরিবর্তে দুষ্টের লালন ও শিষ্টের দমন নীতিতে তার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। বিরোধী দলের নেতাকর্মী এবং অপরাধ জগতের লোকজন তার সাথী। বিভিন্ন মামলা মোকদ্দমার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের গ্রেপ্তারে তার কোন আগ্রহ নেই। আশুগঞ্জের বিভিন্নস্থানে জুয়া খেলা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাজারের পুড়াগুদাম এলাকায় জুয়ার আসরে মারামারিতে খুনের ঘটনাও ঘটেছে। তার যোগদানের পর আশুগঞ্জ মাদক ব্যবসা ও সেবনের স্বর্গ রাজ্যে পরিণত হয়। থানার তিনশ’ গজ দূরত্বের মধ্যে রেলগেট, এলএসডি গোডাউনসহ বিওসি ঘাট, হাসপাতাল সড়কের পেছনে, পুড়াগুদাম, বাঁশগলি, ফেরিঘাট, খড়িয়ালা, আড়াইসিধা, লালপুরবাজারের অর্ধশতাধিক স্পটে মাদক বেচা-বিক্রি চলছে। একারণে উপজেলায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই বৃদ্ধি পাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। মাসোহারা নিয়ে চলতে দেয়া হচ্ছে মাদক ব্যবসা। এছাড়া সারা দেশে মাদক পাচারের ট্রানজিট হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে আশুগঞ্জ। জনপ্রতিনিধিসহ সবার সঙ্গে ওসি দুর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ করেন তারা। ওসির বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগে স্বাক্ষর করেন জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য ফিরোজ মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আবু নাছের আহমেদ, যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক এডভোকেট মোশাররফ হোসেন, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রেহেনা মকবুল, উপজেলা স্বেচ্ছাসবকলীগ সভাপতি মো. শাহিন সিকদার, সাধারণ সম্পাদক মো. সালাহ উদ্দিন, উপজেলা কৃষকলীগ সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম বকুল, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহআলম, শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু মোছা, ছাত্রলীগের আহবায়ক রিফাত সিকদার, যুগ্ম আহবায়ক মো. সিরাজুস সালেকিন মিম, রফিকুল ইসলাম ও হান্নান সিকদার, জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে জেলা পরিষদ সদস্য মোছাম্মৎ স্বপ্না বেগম, চরচারতলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিয়া উদ্দিন খন্দকার, দুর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল করিম খান সাজু, তালশহর ইউপি চেয়ারম্যান আবু শ্যামা, আড়াইসিধা ইউপি চেয়ারম্যান মো. সেলিম মিয়া, তারুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মো. ইদ্রিস হাসান ও শরীফপুরের চেয়ারম্যান সাইফ উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আমির হোসেন। এর আগে ৪ঠা জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে ওসি’র অপসারণ চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ৭ ইউপি চেয়ারম্যান। শনিবার আশুগঞ্জ প্রেসক্লাবে ওসি’র বিরুদ্ধে আরেকটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন। ফেসবুকে মানহানিকর লেখালেখি এবং সরাসরি তাকে হুমকি দেয়ার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তিনি থানায় একাধিক অভিযোগ করলেও ওসি কোন ব্যবস্থা নেননি বলে সালাহ উদ্দিন অভিযোগ করেন।